ঢাকা ০৭:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালি ফসল বংশী, ধলেশ্বরী ও গাজীখালির বুকে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
  • ১৩৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকার ধামরাই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি নদী নাব্য হারিয়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীগুলোতে এখন চাষ হচ্ছে বোরো ধান, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল। নদীর অনেক অংশই আবার দখল করে নিয়েছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। বংশী, ধলেশ্বরী ও গাজীখালি নদী পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলা হয়ে ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে মিশেছে। নদীর দু’পাশ দখল হওয়ায় নদী সরু হয়ে এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। সরজমিন দেখা গেছে, ধামরাইয়ের রাজাপুর, চৌহাট, বালিয়া, কুশুরা, কান্দিকুল, বাটুলিয়া, চাপিলসহ কয়েকটি এলাকার বংশী নদীর বুকজুড়ে চাষ করা হয়েছে ইরি-বোরো ধান ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল। ৩০-৩৫ বছর আগেও এসব নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল এ অঞ্চলের কৃষি, অর্থনীতি, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতা।

কিন্তু নদী কেন্দ্রিক সেই ঐতিহ্য, জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি, সভ্যতা, কৃষি, অর্থনীতি ক্রমশই হয়ে আসছে সংকুচিত। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নদ নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, সেই সঙ্গে পাল্টে যাবে নদীকেন্দ্রিক জীবন জীবিকা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। এলাকার মুরব্বিরা জানান, এক সময় সারা বছর এসব নদীগুলোতে থাকতো থৈ থৈ পানি। সড়ক পথের চেয়ে নদীপথ ব্যবহৃত হতো বেশি। ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে আসা পলি জমে এবং খনন না করায় এগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এখন এই মরা নদী আবার দুঃখের কারণ হচ্ছে বর্ষায়। এ সময় উজান থেকে আসা ঢল নামতে পারে না ভাটিতে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে নদীর পানি দুই কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। তারা দ্রুত নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির প্রভাবশালী লোকজন ধামরাইয়ের এসব নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অপরিকল্পিতভাবে ভেকু মেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে বালু লুটে নেয়ার ফলে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গুচ্ছগ্রাম, সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে নদী দখল, দূষণমুক্ত এবং রক্ষা করার প্রত্যয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বংশী নদী সুরক্ষা আন্দোলন কমিটিসহ সচেতন ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। ধামরাই পৌর মেয়র গোলাম কবির জানান, ধামরাইয়ের বংশী নদীর ৬৪ কিলোমিটার এলাকার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে খননের জন্য গত কয়েক মাস আগে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বংশী নদী পরিদর্শন করেছেন। আমরা আশাবাদী করোনার প্রাদুর্ভাব কেটে গেলেই বংশী নদী খননের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সোনালি ফসল বংশী, ধলেশ্বরী ও গাজীখালির বুকে

আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকার ধামরাই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি নদী নাব্য হারিয়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীগুলোতে এখন চাষ হচ্ছে বোরো ধান, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল। নদীর অনেক অংশই আবার দখল করে নিয়েছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। বংশী, ধলেশ্বরী ও গাজীখালি নদী পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলা হয়ে ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে মিশেছে। নদীর দু’পাশ দখল হওয়ায় নদী সরু হয়ে এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। সরজমিন দেখা গেছে, ধামরাইয়ের রাজাপুর, চৌহাট, বালিয়া, কুশুরা, কান্দিকুল, বাটুলিয়া, চাপিলসহ কয়েকটি এলাকার বংশী নদীর বুকজুড়ে চাষ করা হয়েছে ইরি-বোরো ধান ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল। ৩০-৩৫ বছর আগেও এসব নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল এ অঞ্চলের কৃষি, অর্থনীতি, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতা।

কিন্তু নদী কেন্দ্রিক সেই ঐতিহ্য, জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি, সভ্যতা, কৃষি, অর্থনীতি ক্রমশই হয়ে আসছে সংকুচিত। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নদ নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, সেই সঙ্গে পাল্টে যাবে নদীকেন্দ্রিক জীবন জীবিকা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। এলাকার মুরব্বিরা জানান, এক সময় সারা বছর এসব নদীগুলোতে থাকতো থৈ থৈ পানি। সড়ক পথের চেয়ে নদীপথ ব্যবহৃত হতো বেশি। ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল এই নদী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে আসা পলি জমে এবং খনন না করায় এগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এখন এই মরা নদী আবার দুঃখের কারণ হচ্ছে বর্ষায়। এ সময় উজান থেকে আসা ঢল নামতে পারে না ভাটিতে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে নদীর পানি দুই কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। তারা দ্রুত নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির প্রভাবশালী লোকজন ধামরাইয়ের এসব নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অপরিকল্পিতভাবে ভেকু মেশিন ও ড্রেজার বসিয়ে বালু লুটে নেয়ার ফলে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গুচ্ছগ্রাম, সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে নদী দখল, দূষণমুক্ত এবং রক্ষা করার প্রত্যয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বংশী নদী সুরক্ষা আন্দোলন কমিটিসহ সচেতন ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। ধামরাই পৌর মেয়র গোলাম কবির জানান, ধামরাইয়ের বংশী নদীর ৬৪ কিলোমিটার এলাকার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে খননের জন্য গত কয়েক মাস আগে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বংশী নদী পরিদর্শন করেছেন। আমরা আশাবাদী করোনার প্রাদুর্ভাব কেটে গেলেই বংশী নদী খননের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।